নারীদের দ্বীন শিক্ষার গুরুত্ব

ইসলামের প্রাথমিক যুগে জ্ঞানচর্চার যে প্রবাহ শুরু হয়, নারীরাও সেখানে শামিল হয়েছিল। পরবর্তীতে আববাসীয় ও উমাইয়্যা যুগে নারী শিক্ষার ব্যাপক প্রসার ঘটে।
ইসলাম নারী-পুরুষের মধ্যে কোনো পার্থক্য না করে উভয়কে সমভাবে জ্ঞানার্জনের আদেশ দিয়েছে।
কুরআনের নির্দেশও তাই। কুরআন সকল পাঠককেই আদেশ করছে পড়তে, চিন্তা-গবেষণা করতে, অনুধাবন করতে, এমনকি বিশ্ব প্রকৃতির মাঝে লুক্কায়িত বিভিন্ন নিদর্শন থেকে শিক্ষা গ্রহণ করতে।
মহানবীর (সা.) কাছে প্রথম যে ওহী নাযিল তার প্রথম শব্দ ছিল ‘ইকরা’অর্থাৎ পাঠ কর। এখানে স্ত্রী-পুরুষ সকলকেই পাঠ করতে বলা হয়েছে।

তিনি বলেছেন, ‘জ্ঞানার্জন করা প্রত্যেক মুসলিমের উপরই ফরয।’
এখানেও নর ও নারীর মধ্যে কোনো পার্থক্য না করে পুরুষ ও নারী উভয় সম্প্রদায়ের প্রত্যেককেই জ্ঞানার্জনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

হযরত আয়েশা (রা.) এবং অন্যান্য উচ্চ শিক্ষিতা নারীরা শুধু নারীদের নয়, পুরুষদেরও শিক্ষয়িত্রী ছিলেন। সাহাবী, তাবেয়ী এবং প্রসিদ্ধ পণ্ডিত তাদের নিকট হাদীস, তাফসীর ও ফিকহ শাস্ত্র অধ্যয়ন করতেন।

শিক্ষা-দীক্ষা লাভ করার জন্য নারী জাতিকে রাসুল (সা.) বহু হাদীসে তাকীদ দিয়েছেন। পুরুষদের জন্য শিক্ষা-দীক্ষাকে যেরূপ জরুরি মনে করা হয়েছে, নারীদের জন্যও তেমনি আবশ্যক মনে করা হয়েছে। পুরুষরা যেমন নবী (সা.)-এর নিকট তালীম গ্রহণ করতেন, তেমনি করতেন নারীরাও। শুধু সম্ভ্রান্ত নারীদেরকেই নয়, বরং দাসীদেরকেও শিক্ষা-দীক্ষা দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বুখারী শরীফে বর্ণিত একটি হাদীসে রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘‘যার নিকট কোনো দাসী আছে এবং সে তাকে শিক্ষা দান করে, ভালভাবে সুশিক্ষার ব্যবস্থা করে, ভদ্রতা ও শালীনতা শিক্ষা দেয়, এবং মর্যাদা দান করে, তার জন্যে রয়েছে দ্বিগুণ প্রতিদান।’

পুরুষ সাহাবীগণ যেমন রাসুল (সা.) থেকে দীনের গভীর জ্ঞান অর্জন করতেন, তেমনি নারী সাহাবীগণও নিঃসংকোচে জ্ঞান অর্জন করতেন। সুতরাং সাহাবায়ে কিরামের মধ্যে যেমন পুরুষ মুফতী ছিলেন, তেমনি ছিলেন নারী মুফতী। উমর, আলী, যায়েদ ইবন সাবিত, আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ, আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস, আবদুল্লাহ ইবনে উমার (রা.) প্রমুখ পুরুষ সাহাবীদের ন্যায় আয়েশা সিদ্দীকা, উম্মে সালমা, হাফসা (রা.) প্রমুখ নারী সাহাবীগণও ফতোয়ার গুরুদায়িত্ব পালন করতেন। মর্যাদাসম্পন্ন বহু পুরুষ সাহাবী তাদের নিকট ফতোয়া জিজ্ঞেস করতেন এবং তাদের ফতোয়া মেনে নিতেন।

তিরমিযী শরীফে আবূ মূসা (রা.) সূত্রে একটি হাদীসে বর্ণিত আছে, ‘আমাদের মাঝে যখনই কোনো হাদীসের বিষয় নিয়ে সমস্যা দেখা দিত, আমরা তখনই আয়েশা সিদ্দীকা (রা.) নিকট জিজ্ঞাসা করলে তার সমাধান পেয়ে যেতাম।

‘মাদখাল’নামক কিতাবে বর্ণিত আছে, অতীতে মুসলিম মনীষীদের পত্নীগণ ইসলামী শরীয়তের বিষয়াদি লিখে নারীদের নিকট ব্যাপকভাবে প্রচার ও শিক্ষাদান কাজে আত্মনিয়োগ করেন। যার ফলে তাদেরই গর্ভে বড় বড় আলেম, ফকীহ ও ইমামের জন্ম হয়। যাদের দৃষ্টান্ত বর্তমান বিশ্বে দূর্লভ।

প্রখ্যাত জ্ঞানপ্রবর মাওলানা আশরাফ আলী থানবী (র.) বেহেশতী জেওর নামক গ্রন্থে লিখেছেন, ‘এলাকার মুসলিম নারীদেরকে একত্র করে দীনি শিক্ষা দেওয়া একান্ত দরকার।’ শুধু নামায রোযার আহকাম, কুরআন শরীফ তিলাওয়াত ও সামান্য তাসবীহ-তাহলীল জানলেই ইসলামী জ্ঞানার্জন হলো না, বরং ইসলামী আকাইদ, ইবাদত, ব্যবহারিক জীবন ও সামাজিক জীবনের বিধি-বিধানের ‘ইলম অর্জন করা এবং অপর মুসলিমকে শরীয়তের অনুসরণে সংশোধন করা পুরুষ ও নারী উভয়ের জন্যই জরেুরি। দীনের শিক্ষা ছাড়া বিধি-বিধানের সংস্কার সম্ভব নয়।

সুতরাং শিক্ষা-দীক্ষার ব্যাপারে ইসলামের দৃষ্টিতে নারী-পুরুষের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। অবশ্য শিক্ষার প্রকারে পার্থক্য আবশ্যক। ইসলামের দৃষ্টিতে নারীর প্রকৃত শিক্ষা হচ্ছে, তদ্বারা তাকে আদর্শ স্ত্রী, আদর্শ মাতা এবং আদর্শ গৃহিনীরূপে গড়ে তোলা হবে। যেহেতু তার কর্মক্ষেত্র গৃহ, সেহেতু তাকে এমন শিক্ষা দেয়া প্রয়োজন যা এ ক্ষেত্রে তাকে অধিকতর উপযোগী করে তুলতে পারে। এ ছাড়া তার জন্য ঐ সকল বিদ্যা-শিক্ষারও প্রয়োজন যা মানুষকে প্রকৃত মানুষ রূপে গড়ে তুলতে, তার চরিত্র গঠন করতে এবং তার দৃষ্টিভঙ্গি প্রশস্ত করতে পারে। এই ধরনের শিক্ষা-দীক্ষা প্রত্যেক নারীর জন্য অপরিহার্য। এরপর কোনো নারী যদি অসাধারণ প্রজ্ঞা ও মানসিক যোগ্যতার অধিকারিণী হয় এবং এ সকল মৌলিক শিক্ষা-দীক্ষার পরও জ্ঞান-বিজ্ঞানের অন্যান্য শাখায় উচ্চ শিক্ষা লাভ করতে চায়, তাহলে ইসলাম তার পথে প্রতিবন্ধক হবে না।
তবে শর্ত হলো, কোনো অবস্থায়ই সে শরীআতে নির্ধারিত সীমা অতিক্রম করবে না। শরীআতের গণ্ডির মধ্যে থেকে তাকে উচ্চ শিক্ষালাভে ব্রতী হতে হবে।

মোটকথা, ইসলামের নির্ধারিত সীমা ও গণ্ডির মধ্যে অবস্থান করেই সে যুগের নারীগণ আত্মসংশোধন এবং জাতির খিদমতের উদ্দেশ্যে দীনি-শিক্ষা লাভ করতেন এবং নিজ সন্তানদেরকে এমন আদর্শবান করে গড়ে তুলতেন, যাতে তারা নিজেদের যুগের পথিকৃৎ রূপে কওমের মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে পারতেন।

ইমাম বুখারী (র.) তার সহীহ্ বুখারী গ্রন্থে নারী শিক্ষা সম্পর্কে পৃথক একটি শিরোনামও দিয়েছেন। যার বিশ্লেষণের দ্বারা নারী শিক্ষার জন্য স্বতন্ত্র ব্যবস্থারই গুরুত্ব বোঝা যায়।

রাসুল (সা.) এর সময়ে যে সমস্ত জ্ঞান চর্চার মজলিস অনুষ্ঠিত হতো নারীরা অদূরে পর্দার অন্তরালে উপস্থিত থেকে তার উপকার লাভ করতেন। ইসলাম সম্পর্কে নির্ভুল জ্ঞান অর্জনই ছিল এসব মজলিসে তাদের উপস্থিত হওয়ার উদ্দেশ্য। অনেক নারী ছিলেন, যারা রাসুল (সা.)-এর মুখে কুরআন পাঠ শুনেই তা মুখস্থ করে ফেলতেন। কোনো সময়ে যদি তিনি মনে করতেন যে, নারীরা তার কথা ঠিকমত শুনতে পাননি, তা হলে তিনি পুনরাবৃত্তি করতেন।

আল্-কুরআনের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অংশ বিশেষভাবে ঘরের নারীদের শিক্ষা দেয়ার জন্য নবী (সা.) পুরুষ সমাজকে নির্দেশ দিয়েছেন। ইসলামী সমাজের নারীরা দ্বীন সম্পর্কে জরুরি জ্ঞান লাভ করুক রাসুল (সা.)-এর ছিল বাসনা এবং চেষ্টা। কেবল নীতিগত জ্ঞান শিক্ষা দেয়াই লক্ষ্য ছিল না। সেই সঙ্গে বিভিন্ন কারিগরী শিক্ষা দেওয়াও এর অন্তর্ভুক্ত ছিল। এ জন্য কেবল উপদেশ দিয়েই তিনি ক্ষান্ত হননি, আইনগত ব্যবস্থাও গ্রহণ করেছিলেন। পিতামাতা বা স্বামী যদি পারিবারিক পরিবেশে জরুরী দীনি শিক্ষাদানের ব্যবস্থা না করে, তা হলে ঘরের বাইরে গিয়েও সেই জ্ঞান লাভের সুযোগ নারীদের দিতে হবে, এই হচ্ছে ইসলামী আইনের বিধান।

নবী (সা.)-এর পরবর্তীকালে সাহাবীগণ ব্যক্তিগতভাবে নারীদের চিন্তা ও কর্মের সংশোধনের জন্য ব্যাপক চেষ্টা-সাধনা করেছেন। একইভাবে তারা সমাজ সংস্কারের যে চেষ্টা-সাধনা করতেন তাতেও পুরুষদের সঙ্গে নারীরাও অন্তর্ভুক্ত থাকত। আয়েযা নাম্নী এক নারী সাহাবী আব্দুল্লাহ্ ইব্নে মাসউদ (রা.)-এর বক্তৃতার উল্লেখ করে বলেছেন, ‘আমি আব্দুল্লাহ্ ইবনে মাসউদ (রা.)-কে নারী ও পুরুষের উদ্দেশ্যে এই বলে নসীহত করতে দেখেছি যে, নারী পুরুষ নির্বিশেষে তোমাদের মধ্যে থেকে যেই ফিতনার যুগের মুখোমুখী হবে সে যেন নবী (সা.)-এর সাহাবাদের কর্মপন্থা দৃঢ়ভাবে অনুসরণ করে।’

আয়েশা (রা.)-এর বিভিন্ন বিষয়ে ব্যাপক জ্ঞান সম্পর্কে তার ছাত্র উরওয়া ইবন্ যুবায়র (রা.) বলেছেন, ‘আমি কুরআন, ইসলামের ফরযসমূহ, হালাল ও হারাম, কাব্য ও সাহিত্য, আরবদের ইতিহাস ও নসবনামা বিষয়ক জ্ঞানের ক্ষেত্রে আয়েশা (রা.)-এর চেয়ে অধিক জ্ঞানী লোক আর দেখিনি।’

তাবেয়ীদের যুগেও বিকল্প পন্থায় নারীদের ইসলামী শিক্ষার প্রচলন ছিল।
সে যুগে নারীদের মধ্যে বড় বড় বিদূষী, বিজ্ঞানী এবং হাদীসবেত্তা বিদ্যমান ছিলেন। আয়েশা, আসমা, উম্মে দারদা, ফাতেমা বিনতে কায়েস (রা.)প্রমুখ নারী সাহাবীদের ‘ইলমে যোগ্যতা ও ইসলামী আইন বিদ্যা সম্পর্কে তাবাকাতে ইবনে সাদ এবং মুসনাদে আহমদে বিবরণ রয়েছে। আয়েশা (রা.) -এর নিকট হতে অনেক সাহাবী ও তাবে‘য়ী দীনের বিভিন্ন বিষয়ে শিক্ষালাভ করতেন।

তাবেয়ীদের যুগে বিখ্যাত মুহাদ্দিস ও ফকীহ্ কাসিম ইবনু মুহাম্মদ (র.) ইমাম যুহরীকে বললেনঃ আমি তোমার মধ্যে জ্ঞান পিপাসা লক্ষ্য করছি। আমি কি তোমাকে জ্ঞানে পরিপূর্ণ একটি পাত্র দেখিয়ে দেব না? যুহরী বললেন, হ্যাঁ, অবশ্যই। তিনি বললেন, ‘আমরাহ্ বিনতে আব্দুর রহমানের মজলিস কখনো ছেড়ে থেকো না। কারণ, তিনি আয়েশা (রা.)-এর কোলে লালিত-পালিত। অতএব, তিনি তার জ্ঞানের পূর্ণ উত্তরাধিকারিণী। ইমাম যুহরী (র.) বললেন, তার পরামর্শ অনুসারে আমি ‘আমরাহ্ বিনতে আব্দুর রহমানের খিদমতে হাজির হলে জানতে পারলাম, প্রকৃতই তিনি জ্ঞানের অফুরন্ত ভাণ্ডার।

হাফিয ইবনে হাজার আসকালানী (র.) উম্মে সালমা (রা.) সম্পর্কে লিখেছেন, ‘উম্মে সালামা (রা.) পরিপক্ক বুদ্ধি ও সঠিক সিদ্ধান্তের অধিকারিণী ছিলেন।’

উম্মে সালামা (রা.)-এর কন্যা যায়নাব (রা.) সম্পর্কে ইবনু আব্দিল বার (র.) বলেন, ‘তিনি তার যুগের সর্বাপেক্ষা বড় ফকীহদের অন্যতম ছিলেন।’

আবূ রাফে সায়িগ (র.) বলেন, ‘যখনই আমি ফিকহ্ শাস্ত্রে অভিজ্ঞ মদীনার কোনো নারীর কথা স্মরণ করি, তখনই যায়নাব বিনতে আবূ সালামার কথা মনে পড়ে যায়।’

উম্মুল হাসান নামে উম্মে সালামার একজন দাসী ছিলেন। তিনি এতই যোগ্যতার অধিকারিণী ছিলেন যে, মেয়েদের মধ্যে নিয়মিত দ্বীনের প্রচার ও ওয়াজ নসীহত করতেন।

উম্মূল মু’মিনীন সাফিয়্যা (রা.) সম্পর্কে ইমাম নববী (র.) বলেন, ‘তিনি ছিলেন অত্যন্ত জ্ঞানবতী ও বুদ্ধি বিবেচনার অধিকারিণী নারীদের একজন।’

আবুদ্দারদা (রা.)-এর স্ত্রী উম্মুদ্দারদা (রা.)-এর জ্ঞান ও মর্যাদা এত উচ্চ পর্যায়ের ছিল যে, ইমাম বুখারী (র.) তার আমলকে সহীহ্ বুখারী গ্রন্থে প্রমাণ ও উদাহরণ হিসেবে পেশ করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘উম্মুদ্দারদা (রা.) একজন ফকীহ্ নারী ছিলেন। তিনি নামাযে পুরুষের মত করে বসতেন। তার এই আমল দলীল হিসেবে গণ্য।’

‘তিনি বিবেক-বুদ্ধি, মর্যাদা, সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতার অধিকারিণী নারীদের মধ্যে গণ্য হতেন। এছাড়া তিনি ছিলেন ইবাদতগুজার এবং মুত্তাকী।’

অমিয়া বাগদাদী নাম্নী জনৈকা নারী মদীনাতে ইমাম মালিক (র.)-এর নিকট ‘ইলমে হাদীস এবং ইমাম শাফেয়ী (র.)-এর নিকট ‘ইলমে ফিকহ শিক্ষা লাভ করেন। এমনিভাবে ইসলামের প্রথম যুগে নারীরা হাদীস, তাফসীর ও ফিকহ এর বিশদ জ্ঞান অর্জন করে দীনের প্রচারণার কাজে আত্মনিয়োগ করেন। আর এ শিক্ষা ব্যবস্থা ও প্রচারণা পর্দাহীনভাবে হয়নি। বরং পর্দার মাধ্যমেই হয়েছে।

নারীদের প্রাথমিক শিক্ষাগার ও প্রশিক্ষণ স্থান হলো গৃহ। তাই পিতামাতা যাতে কন্যাদেরকে এবং স্বামী যাতে স্ত্রীকে হক ও বাতিলের মধ্যে পার্থক্য নিরূপণ করতে শেখায় এবং ত্রুটি-বিচ্যুতি থেকে রক্ষা করার ব্যবস্থা গ্রহণ করে, ইসলাম সেদিকে তাদের দৃষ্টি দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।

কুরআন মাজীদে বলা হয়েছে,
‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা নিজেদেরকে এবং তোমাদের পরিবার-পরিজনকে দোযখের আগুন থেকে বাঁচাও।’

এ আয়াতের অর্থ আলী (রা.) এভাবে করেছেন,
‘তোমরা নিজেরা শেখ এবং পরিবারবর্গকে শেখাও সমস্ত কল্যাণময় রীতি-নীতি এবং তাদের আদব শিক্ষা দাও এবং এসব কাজে অভ্যস্ত করে তোল।’

তাই ঘরের পুরুষরা দ্বীন শিখে তাদের নারীদেরকে শেখাবে। এমনিভাবে বাড়িতে বাড়িতে ঘরোয়া দ্বীনী মাহফিল এবং ঘরোয়া দ্বীনী তালীমের আয়োজন করা। আর ঘর/বাসার কাছে অনাবাসিক তালীমের ব্যবস্থা থাকলে সেখানে গিয়ে দ্বীন শিখে আসতে পারে।
এতে প্রত্যেক ঘরেই দ্বীনী তালীমের চর্চা হবে এবং ঘরে ঘরে দ্বীনী পরিবেশ কায়েম হবে- ইনশাআল্লাহ।

তাছাড়া মহিলাদের ক্ষেত্রে শরীয়তের নির্দেশনা হল,
ইবাদত-বন্দেগী থেকে শুরু করে তাদের সকল কাজ পুরুষদের থেকে আলাদা হবে। তাদের অবয়ব ও চলাফেরা পুরুষদের দৃষ্টির আড়ালে থাকবে।
এমনকি জামাতের কাতারে পুরুষদের পেছনে শিশুদের কাতার তারপর মহিলাদের কাতার রাখা হয়েছে।
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের যামানায় মহিলারা পুরুষদের পরে শিশুদের পেছনের অংশে নামায আদায় করত।

অপরদিকে, পুরুষের জন্য যেখানে পাঁচ ওয়াক্ত নামায মসজিদে এসে জামাতের সাথে আদায় করা শরীয়তের গুরুত্বপূর্ণ হুকুম। সেখানে নারীদেরকে গৃহাভ্যন্তরে নামায আদায় করতে উৎসাহিত করা হয়েছে।
মসজিদে নববীতে যেখানে এক রাকাত নামাযের ফযীলত এক হাজার রাকাত সমান। এর সাথে আবার রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মত ইমামের পেছনে নামায পড়ার সৌভাগ্য তো রয়েছেই। তা সত্ত্বেও সে সময় নারী সাহাবীদেরকে তাদের গৃহাভ্যন্তরের সর্বাধিক নির্জন স্থানে নামায পড়াকে উত্তম বলা হয়েছে।
এর উল্টো এমন একটি হাদীসও নেই, যাতে মহিলাদেরকে সম্বোধন করে মসজিদে এসে জামাতের সাথে নামায পড়তে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বা এর দিকে উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে।

 এই পোস্টটি নিজ আত্নীয়স্বজন ও পরিচিতজনের মাঝে প্রচার করলেও নেকির অংশীদার হবেন ইনশাআল্লাহ। তাই আসুন, হোয়াটসঅ্যাপ, ফেইসবুক-মেসেঞ্জারসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে উপকারী ইলম প্রচারের সওয়াব অর্জন করি।

রাসূলুল্লাহ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
مَنْ دَلَّ عَلَى خَيْرٍ فَلَهُ مِثْلُ أَجْرِ فَاعِلِهِ
“যে ব্যক্তি কোনো ভালো কাজের পথ দেখাবে, সে আমলকারির সমান সওয়াব অর্জন করবে।“ [সহিহ মুসলিম]

সংগৃহিত।